কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা 9 Class-পয়েন্ট ২০

pro bangladesh
By -
0

 

ভূমিকা : 

মানবজীবনে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল ৷ সেই সঙ্গে পরিবর্তনশীল তার নির্মিত সভ্যতা আজ থেকে একশ বছরের আগে সভ্যতা কেমন ছিলো আর বর্তমানে সভ্যতা কোন জায়গায়  এসে  পৌঁছেছে তা ভাবতেই অভাক লাগে । সভ্যতার  এই ক্রম  পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে বিজ্ঞান ।

 

বর্তমানে বিশ্বে মানুষে এই যে অগ্রযাত্রা তা বিজ্ঞানের আবিষ্কারের ওপর ভিওি করেই  তা রচিত হয়েছে । বিজ্ঞান মানুষকে গতীশীল করছে এবং সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে করছে ত্বরান্বিত । এবং প্রকৃতিকে শাসনের মতো শক্তিশালী কার্মকাণ্ড মানুষ বিজ্ঞানের হাত ধরে সম্ভবপর করে তুলছে । আর বর্তমানে কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূএ ও আবিষ্কার করেছে ৷

কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা

মানবসভ্যতার কৃষি :

মানুষের সভ্যতার ইতিহাস অত্যন্ত পুরানো  ৷  তবে সেই সভ্যতার প্রথম প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো কৃষকের হাত ধরে ৷মানুষ শিকারের বিকল্প হিসাবে কৃষিকে বেঁছে নিয়ে তার জীবনকে সুস্থির করেছিলো । তাই এটি মানুষের আদিমতম জীবিকার একটি উপায় বটে ৷ সভ্যতার ইতিহাসকে পর্যলোচনা করে দেখা যায় ৷ যে কৃষিতে যে দেশ  যত তারাতাড়ি অগ্রগতি সাধন করতে পেরেছে , সে দেশ তত তাড়াতাড়ি সভ্যতার উপরে সিড়িকে  অতিক্রম করেছে ৷  এ থেকে আমরা উপলব্ধি  করতে পারি যে ৷  কৃষির উন্নতিতেই সমাজ ও দেশ সভ্যতার ক্রমন্নেতি সম্ভব । 


কৃষি বিজ্ঞান বলতে কি বুঝায় ?

কৃষি বিজ্ঞান (বা সংক্ষেপে কৃষি বিজ্ঞান) হল জীববিজ্ঞানের একটি বিস্ত্রিত বহু বিষয়ক ক্ষেএ যা সঠিক প্রাকৃতিক অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বিজ্ঞাণের অংশগুলিকে অন্তভূক্ত করে যা কৃষির অনুশীলন এবং বোঝার জন্য ব্যবহারিত হয়। কৃষি বিজ্ঞানের পেশাদারদের বলা হয় কৃষি বিজ্ঞানি বা কৃষিবিদ ।

  

প্রাচীন যুগের কৃষি : 

 প্রচীন যুগের পৃথীবি মানুষের  জন্য খুব সুখকর ছিল না । পদে পদে তাদের জন্য বিপদ অপেক্ষা করত এবংভয়াবহ সব বন্য জীবজন্তুর সঙ্গে তাদের লড়তে হতো ৷  এ অবস্থায় হঠাৎ তাদের হাতে  কৃষিকাজের সূত্র আবিষ্কৃত হয় ৷ প্রাথমিক অবস্থায় মানুষ নিজেই লাঙলের ভার বহণ করতো ৷  কিন্তু তৎপরবর্তী কালে গরু ,ঘোড়া, ও মহিষের সাহায্যে জমি চাষের প্রচলন করেছিলো ।

 

কিন্তু প্রকৃতির কাছে মানুষ ছিলো ভীষণ অসহায় ।  বন্যা, খড়া, ঝড়, অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টিতে ফসলের কি করণীয়  তা তারা জানত না । একই জমিতে একইভাবে তারা ফসল ফলানোর চেষ্টা করত। ফলে জমির উর্বর ও শক্তি কয়ে কাঙিক্ষত ফসল হত না । এ ছাড়াও বীজ সম্পর্কে তাদের বিশদ কোন জ্ঞ্যন ছিলো না।তাই প্রচীন কৃষির ইতিহাস খুব সুখকর ছিলো না বলেই মনে হয় ৷   


বিজ্ঞানসম্মত কৃষির বাস্তবিক গুরুত্ব : 

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে কৃষির বাস্তবিক গুরুত্ব অনেকখানি । তবে পুরোনো পদ্ধতির চাষাবাদে এখন আর সাফল্য লাভ করা সম্ভব নয় । এখন প্রয়োজন অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ । উন্নত বিশ্বের মতো ছোট জায়গায় অধিক ফসল ফলানোর কৌঁশল আমাদেরও আয়ও করতে হবে । তবেই কৃষক ও কৃষির সমন্বিত সাফল্য আসবে ৷  


আধুনিক কালের কৃষি :

অষ্টোদশ শতাব্দির শেষ দিকে এবং উনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বেঁনেসাস তথা শিল্পবিপ্লবের মাধ্যোমে কৃষি বিস্ত্রিত উন্নতি সাধন করে ৷  কৃষিক্ষেএে কৃষক উন্নত যন্ত্রপাতি, বীজ, সার, প্রভৃতির সঙ্গে পরিচিত হয় ৷ কাঠের লাঙ্গলের পরিবর্তে যন্ত্র দ্বারা চাষ শুরু হয় ৷

 

সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রনে নানা পদ্ধতি আবিস্কৃত হয় । খরায় ফসল ফলানোর পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকরা অবগত হয় ৷ বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের সাহায্যে সেচ দেওয়ার ফলে শুকনো মাটিকেও সবুজ ফসল হেসে উঠে । উন্নত বীজ ও রসায়নিক সার , আবহাওয়া পূর্বাভাস, মাটির পরীক্ষানিরীক্ষা করে কৃষক এখন মাটিতে ফসল ফলায় ৷ ফলে বড় ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ব্যতিরকে ফসল ফলানোরতে তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না ।  


বিজ্ঞানিক কৃষি ও অর্থনীতি : 

বিজ্ঞানভিওিক কৃষিকাজের ফলে অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন সাধিত হওয়া সম্ভব ৷  অত্যন্ত আনন্দের বিষয় এই যে আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি ৷  কিছু কিছু ফসল আমরা বাহিরে ও রপ্তানি করতে সমর্থ হচ্ছি ।  জীবন রহস্য আবিস্কারের ফলে পাটের সোনালী দিন আবার আমাদের মধ্যে আসতে শুরু করছে ।  বহু আগে থেকেই আমরা বিভিন্ন দেশে চা রপ্তানী করে থাকি । সুতরাং সর্বাধুনিক বিজ্ঞানভিওিক চাষাবাদের ফলে আমাদের পক্ষে এ সাফল্যকে আরো বড় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব । 


কৃষি গভেষণা প্রতিষ্ঠান কি ?

বাংলাদেশে কৃষি গভেষণা ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান যা ২০৫ টির ও বেশি কৃষি বিষয়ক ফসলের গবেষণা কারর্যক্রম পরিচালনা করে । প্রতিষ্ঠানটি জয়দেবপুর , গাজীপুরে অবস্থিত । এই প্রতিষ্ঠানটি  ডা . কাজী এম বদরুদ্দোজা দ্বারা স্থাপিত হয়েছে ৷ 


কৃষি শিক্ষার জনক কে ?

 উদ্ভিদ বিজ্ঞানের জনক হিসাবে কার্ল লিনিয়াস ( Carl  Linnaeus) কে পরিচিতি দেওয়া হয় ।  



কৃষি বিজ্ঞানীর কাজ কী ?

কৃষি বিজ্ঞান , খাদ্য এবং ফাইবার উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াকরণের সাথে সম্পর্কিত বিজ্ঞান । এর মধ্যে রয়েছে মাটি  চাষের প্রযুক্তি , শস্য চাষ ও ফসল কাটা, পশু উৎপাদন , এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং মানুষের  ব্যবহার এবং ব্যবহারের উদ্ভিদ এবং প্রণী পণ্য । কৃষি প্রযুক্তিও দেখুন ৷ খাদ্য মানুষের সবচেয়ে মৌলিক  চাহিদা ৷ 


কৃষি কতো প্রকার ও কি কি ? 

  • একটি সূএ অনুসারে ২ টি প্রধান ধরণের কৃষি হল বাণিজ্যিক এবং জীবিকানির্ভর কৃষি । 
  • বণিজ্যিক চাষ হলো : বিক্রির জন্য শস্য  এবং পশুসম্পদ উৎপাদন , সাধারণত যান্ত্রীকীকরণ এবং বড় আকারের অপারেশন ব্যবহার করে ।
  • জীবিকা চাষ হলো : কৃষকের নিজস্ব  খরচের জন্য  শস্য  এবং পশুসম্পদ উৎপাদন ৷ সাধারন  নিম্ন স্তরের প্রযুক্তি এবং ছোট আকারের ক্রিয়াকলাপ সহ । 


বাংলাদেশে কয়টি কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আছে ?

ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল ( Agricultural) রিসার্চ সিস্টেম ( NARC) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল 

(BARC) এবং ১০ টি জাতীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত । 


কৃষি উন্নয়ণে বাংলাদেশ : 

কৃষি বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে তাই দেশ ও জাতি কল্যাণে কৃষি কাজের উন্নতি সাধন করতে হবে । সরকার ক্ষেএে আধুনিক যন্তপাতি ব্যবহারে সোচ্চার এবং কৃষির উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে । কৃষি উন্নত করতে হলে সনাতন পদ্বতির চাষাবাদ বাদ দিয়ে আধুনিক যন্তপাতি সার বীজ ব্যবহার করতে হবে ৷ আর কৃষি কাজে উন্নতির জন্য বাংলাদেশ সরকার সরবরাহ করতে উচ্চ ফলনশীল বীজ । 


উপসংহার

কৃষি কাজে বিজ্ঞান এ বৈজ্ঞানিক কৃষিক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে,যা শুধুমাত্র খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েই থেমে নেই বরং কৃষকদের আয় বৃদ্ধি এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে । বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ কৃষিতে টেকসই উন্নয়ন এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে  সহায়ক করছে । 

উন্নত প্রযুক্তি,গবেষণা এবং সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক কৃষির অগ্রগতির ফলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে । বাংলাদেশ সহ অন্যান্য কৃষিনির্ভর দেশ গুলোর জন্য বৈজ্ঞানিক কৃষি এবং অর্থনীতির সংযোগ দেশের খাদ্য নিরা পত্তা জীবনমান উন্নয়ন এবং অর্থনৈতীক বৃদ্ধির অপরিহার্য ভুমিকা পালন করছে । এতে করে কৃষি কাজে বিজ্ঞান এর ভুমিকা সবাই উপলব্ধি করতে পারবে । 


আরও পড়ুন 







একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)